শনিবার ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

টানা তিনবার লন্ডনের মেয়র সাদিক খান

অনলাইন ডেস্ক   |   রবিবার, ০৫ মে ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   48 বার পঠিত

টানা তিনবার লন্ডনের মেয়র সাদিক খান

সাদিক খান।

টানা তৃতীয়বারের মতো লন্ডনের মেয়র নির্বাচিত হয়ে রেকর্ড করেছেন সাদিক খান। শনিবার (৪ মে) নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয়। তিনি ৪৩.৭ শতাংশ ভোটে জয়ী হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী, কনজারভেটিভ দলের প্রার্থী সোসান হল পেয়েছেন ৩২.৬ শতাংশ ভোট।

পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত সাদিক খান সুযোগ-বঞ্চিত পরিবারের ছেলে। সাদিক খান তার বাপ-মায়ের আট সন্তানের একজন। পাকিস্তান থেকে আসা সাদিক খানের বাবা ছিলেন বাস ড্রাইভার এবং মা জীবিকা নির্বাহের জন্য সেলাইয়ের কাজ করতেন।

তারা থাকতেন দক্ষিণ লন্ডনের একটি এলাকায় দরিদ্রদের জন্য তৈরি সরকারি কাউন্সিল ফ্ল্যাটে।

ছোটবেলা থেকেই সাদিক খান নিজে যে আদর্শে বিশ্বাসী তা নিয়ে লড়তে এবং সাফল্যের জন্য সব প্রতিকূলতার মোকাবেলা করতে পিছপা হননি।

সাদিক খানের বাবা আমানুল্লাহ খান এবং মা সেহেরুন খান পাকিস্তান থেকে লন্ডনে আসেন ১৯৭০ সালে- সাদিক খানের জন্মের কিছুদিন আগে।

সাদিক খান তাদের আট ছেলেমেয়ের মধ্যে পঞ্চম। তারা সাত ভাই এবং এক বোন। দক্ষিণ পশ্চিম লন্ডনের যে তিন-কামরার ফ্ল্যাটে তারা থাকতেন, সেখানে তাদের বড় পরিবারকে গাদাগাদি করে থাকতে হতো।

 

সাদিক খান ও তার স্ত্রী সাদিয়া আহমেদ।

 

স্থানীয় একটি সরকারি স্কুলে তিনি পড়তেন এবং সেখানেই ১৫ বছর বয়সে তিনি রাজনীতির দিকে ঝুঁকে পড়েন এবং লেবার পার্টিতে যোগ দেন। আর্নেস্ট বেভিন কলেজ নামে ওই স্কুলের প্রধান ছিলেন যুক্তরাজ্যের কোনো মাধ্যমিক স্কুলের প্রথম মুসলমান প্রধান শিক্ষক।

সাদিক খান ছোটবেলা থেকেই মুসলিম ধর্মবিশ্বাসকে লালন করেছেন এবং তিনি বলেছেন বাবা-মার কাছ থেকে এই শিক্ষা তিনি পেয়েছিলেন যে ‘কোথাও অন্যায় কিছু দেখলে তা পরিবর্তনের চেষ্টা করা তোমার কর্তব্য।’

তিনি লেখাপড়ায় ভাল ছিলেন, ফুটবল, বক্সিং এবং ক্রিকেট অনুরাগী ছিলেন। এমনকী তরুণ হিসেবে তিনি সারে কাউন্টি ক্রিকেট দলেও কিছুদিন ট্রেনিং নিয়েছিলেন।

তবে তিনি বলেছেন ফুটবল মাঠে কীভাবে তাকে ও তার ভাইকে বর্ণবাদী মন্তব্য শুনতে হয়েছে, যার কারণে তিনি ঘরে বসে খেলা দেখাই ‘নিরাপদ’ মনে করতেন। পরে তিনি লিভারপুল দলের ভক্ত হয়ে ওঠেন।

প্রথমদিকে তিনি বিজ্ঞান নিয়ে পড়েছিলেন- ভেবেছিলেন দন্ত চিকিৎসক হবেন। পরে একজন শিক্ষকের পরামর্শে তিনি আইন পড়তে যান। ওই শিক্ষক তাকে বলেছিলেন, ‘তুমি সবসময় তর্ক করো।’

১৯৯৪ সালে তিনি একটি আইন সংস্থায় মানবাধিকার আইনজীবী হিসাবে যোগ দেন। ওই বছরই তার স্ত্রী সাদিয়া আহমেদের সঙ্গে তার পরিচয় ও বিবাহ। সাদিয়াও আইন পড়তেন এবং কাকতালীয়ভাবে তিনিও বাসচালকের কন্যা।

তাদের দুই কন্য সন্তান আছে – আনিসা আর আম্মারা।

সাদিক খান স্থানীয় প্রশাসনে ১২ বছর কাজ করেছেন। ২০০৪ সালে আইনজীবীর কাজ ছেড়ে তিনি পুরো সময়ের জন্য রাজনীতিতে যোগ দেন।

২০০৫ সালে তিনি দক্ষিণ লন্ডনের টুটিং এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

রাজনীতিতে বিভিন্ন দলে তার সমসাময়িকরা বলেছেন সাদিক খান ‘খুবই বুদ্ধিদীপ্ত’ এবং ‘একগুঁয়ে ব্যক্তি এবং ‘তার যুক্তি খারিজ করে দেয়া প্রায়ই কঠিন’।

২০১০ সালে গার্ডিয়ান পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাদিক খান বলেছিলেন ‘আমি উদ্ধত কোনো মন্তব্য করতে চাই না- তবে ব্রিটিশ মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে গুছিয়ে যুক্তি দিয়ে বক্তব্য তুলে ধরতে পারে এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম, খুব কম মুসলমানকে বলতে শোনা যায় ‘আমি একইসঙ্গে ব্রিটিশ, মুসলমান এবং লন্ডনবাসী- তা নিয়ে আমি গর্বিত।’

Facebook Comments Box

Posted ৮:১৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৫ মে ২০২৪

ajkersangbad24.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক
ফয়জুল আহমদ
যোগাযোগ

01712000420

fayzul.ahmed@gmail.com