গাজীপুর প্রতিনিধি | সোমবার, ০৪ মার্চ ২০২৪ | প্রিন্ট | 121 বার পঠিত
গাজীপুরের কালিয়াকৈরের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের এক প্রভাষক কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে ছুটি না নিয়ে স্ত্রী-সন্তানসহ পাড়ি জমিয়েছেন আমেরিকায়। তিন দিনের ছুটি নিয়ে তিনি প্রায় ৪৪ দিন ধরে অনুপস্থিত থাকায় ওই বিভাগের প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী বিপাকে পড়েছেন।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ। কলেজটি ২০১৬ সালে জাতীয়করণ করা হয়। কলেজের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগে প্রথম বর্ষে দুইশ, দ্বিতীয় বর্ষে প্রায় দেড়শ এবং ডিগ্রিতে প্রায় দেড়শ শিক্ষার্থী রয়েছে। ওই বিষয়ের একমাত্র প্রভাষক তোফায়েল আহমেদ। তিনি গত ২০ জানুয়ারি কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তিন দিনের ছুটি নেন। তিনদিনের ছুটি নিয়ে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে চলে যান আমেরিকায়। বেশ কিছুদিন তিনি অনুপস্থিত থাকার পর কলেজের অন্য শিক্ষকরা তার খোঁজ করে স্বজনদের কাছে জানতে পারেন তিনি দেশে নেই।
একজন প্রভাষক বিদেশ ভ্রমণ করতে পারবেন তবে সেক্ষেত্রে কলেজ কর্তৃপক্ষের ছুটি এবং মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু এসবের কোনটারই তোয়াক্কা করেননি ওই প্রভাষক। সরকারি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের বা সংশ্লিষ্ট বিভাগের কারো কাছ থেকে ছুটির অনুমতি না নিয়ে ভ্রমণ ভিসা নিয়ে চলে গেছেন আমেরিকায়।
জনৈক প্রভাষক জানান, ওই শিক্ষক কোথায় আছেন আমরাও জানি না। তিনি কলেজে অনুপস্থিত আছেন এটাই দেখতে পাচ্ছি। বিষয়টি কলেজের অধ্যক্ষ জানতে পারলেও দৃশ্যমান ও কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত গ্রহণ করেননি। প্রথম বর্ষ, দ্বিতীয় বর্ষ ও ডিগ্রি মিলিয়ে প্রায় ৫৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ওই বিষয়ে দুইজন শিক্ষকের পদ থাকলেও একটি পদ খালি থাকায় তোফায়েল আহমদকেই সব ক্লাস নিতে হতো। এখন প্রায় ৪৪ দিন হয়ে গেলেও প্রভাষক তোফায়েল আহমেদ ফিরে না আসায় ওই বিষয়ে ক্লাসও করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা।
কলেজের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ছাত্র সাব্বির রহমান জানায়, প্রায় দেড়মাস ধরে তাদের ওই বিষয়ে ক্লাস হচ্ছে না। ক্লাস না হওয়ায় তাদের লেখাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটছে। শুনেছি তোফায়েল স্যার নাকি পরিবারসহ আমেরিকায় চলে গেছেন।
উল্লেখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের বর্তমানে বেশ কয়েকটি বিভাগে শিক্ষক সংকট রয়েছে। এসব বিভাগের মধ্যে রয়েছে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগে ২ জন, সমাজকর্ম বিভাগে ১ জন, অর্থনীতি বিভাগে ১ জন, ভূগোল বিভাগে ১ জন, আইসিটি বিভাগে ১ জনসহ মোট ৬টি পদ শূন্য রয়েছে। বর্তমানে শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ না হলে শিক্ষার্থীরা অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে অভিভাবকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. সুফিয়া বেগম বলেন, গত ২৪ জানুয়ারি থেকে তিনি কলেজে অনুপস্থিত। তিনি ছুটি নেননি, তবে আবেদন করেছিলেন। আমি বিষয়টি ডিজি অফিসে জানিয়েছি এবং নতুন শিক্ষক চেয়েছি। শিক্ষক তোফায়েল আহমেদের বাড়িতে শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়েছে। অপরদিকে কলেজে ৫টি বিভাগে মোট ৬ জন শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এসব শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
Posted ৭:১৮ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৪ মার্চ ২০২৪
ajkersangbad24.com | Fayzul Ahmed