অনলাইন ডেস্ক | মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ | প্রিন্ট | 89 বার পঠিত
১৯৬৭ সালে বেহুলায় অভিনয় করার সময় চিত্র পরিচালক জহির রায়হানের সাথে পরিচয় এবং ১৯৬৭ সালেই তাকে বিয়ে করেন সুচন্দা। ১৯৭২ সালে ভাই শহীদুল্লাহ কায়সারকে মিরপুরে খুঁজতে গিয়ে নিখোঁজ হন জহির রায়হান।
জহির রায়হানের সঙ্গে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সূচনা প্রসঙ্গে সুচন্দা বলেন, “আমাকে এই ছবির নায়িকা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল, তখন সত্যি বলতে কি আমি ছিলাম অন্তসত্ত্বা। একজন গর্ভবতী নারী ছবিতে নায়িকা হিসেবে অভিনয় করবে- এটা ভেবে কেমন লাগছিল। জহির রায়হানকে জিজ্ঞেস করলাম- ‘আমি কি এভাবে অভিনয় করবো?’ জহির রায়হান বললেন, ‘কেন করবে না? অবশ্যই করবে। শুধু এই ছবি না, তুমি আমার আর সব ছবিতেই অভিনয় করবে।
তিনি বলেন, আমিও এরইমধ্যে চিত্রনাট্য পড়ে ফেললাম। এমন অপূর্ব সংলাপ ও চিত্রনাট্য এই ছবি আমি করবো না- এটা হতেই পারে না। শুরু করলাম অভিনয়। মানিকগঞ্জ, ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ও এফডিসিতে শুটিং শুরু হলো। প্রতিটি শটের পর আমি তার পাশে থাকতাম। সত্যি কথা বলতে আমি সবসময় জহির রায়হানের পাশেই থাকতাম।”
সুচন্দা বললেন, “জহির রায়হানের ছবিই কথা বলতো। তার ফ্রেমিং বলে দিতো এটা জহির রায়হানের ছবি। গল্পের বাস্তবতার জন্য ২১শে ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শুটিং করা হবে। ওই ২১ তারিখেই প্রভাত ফেরির সময় শুটিং করা হলো। যারা প্রভাত ফেরিতে এসেছিল শুটিংয়ের সময় তারা সকলেই সহযোগিতা করলো। এভাবেই ধীরে ধীরে নির্মিত হলো চলচ্চিত্রটি।”
স্বাধীনতার পূর্ব মুহূর্তে ‘জীবন থেকে নেয়া’র মতো চলচ্চিত্র নির্মাণ খুব একটা সহজ ছিল না বলে মনে করেন সুচন্দা। জানালেন এই ছবি নির্মাণের পেছনে শত প্রতিবন্ধকতার কথা।
সুচন্দা বলেন, “এফডিসিতে শুটিং চলছিল। এ সময় আর্মির গাড়ি চলে এলো। বলা হলো এই ছবির শুটিং বন্ধ করতে হবে। জহির রায়হান ছিলেন অত্যন্ত সাহসী মানুষ। তিনি জানতে চাইলেন কেন বন্ধ করা হবে? তারা কথা শুনলো না। জহির রায়হানকে উঠিয়ে নিয়ে গেল। এর প্রতিক্রিয়া হলো। পরে অবশ্য তাকে ফিরিয়ে দিয়ে যাওয়া হলো। ছবির শুটিং শেষ হওয়ার পরেও ছিল প্রতিবন্ধকতা। সেন্সরবোর্ডে এই ছবি আটকে দেওয়া হলো। পারিবারিক গল্পের মধ্যে একটি স্বাধীন দেশের চেতনা প্রবাহিত হচ্ছে, সেটা মেনে নিতে পারছিলেন না শাসক শ্রেণীরা। রাস্তায় নেমে এলো সাধারণ জনতা। তারা ‘জীবন থেকে নেয়া’ চলচ্চিত্রের মুক্তির জন্য আন্দোলন শুরু করলো। অবশেষে ৭০ সালে মুক্তি পেল ছবিটি।”
সুচন্দা বলেন, “মুক্তির পরেই ছবিটি সুপার ডুপার হিট। যেখানেই যাই জীবন থেকে নেয়ার গল্প। দেশে বিদেশে সবাই আমার এতো প্রশংসা করলো যে আমার এখনো মনে পড়ে সেসব কথা। এই ছবিটি আমাদের স্বাধীনতার চেতনাকে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করে। এর একটি অংশ হতে পেরে আমি গর্বিত।”
Posted ৭:২৫ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারি ২০২৪
ajkersangbad24.com | Fayzul Ahmed