শনিবার ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

গাজায় ক্ষুধাকে যুদ্ধের হাতিয়ার বানিয়েছে ইসরায়েল

অনলাইন ডেস্ক   |   সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   69 বার পঠিত

গাজায় ক্ষুধাকে যুদ্ধের হাতিয়ার বানিয়েছে ইসরায়েল

চলমান ইসরায়েল-হামাস সংঘাতে ক্ষুধাকে ইসরায়েল যুদ্ধের হাতিয়ার বানিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। ছবি: রয়টার্স

চলমান ইসরায়েল-হামাস সংঘাতে ক্ষুধাকে ইসরায়েল যুদ্ধের হাতিয়ার বানিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। সংস্থাটি এই ‘ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধের’ বিরুদ্ধে বিশ্বনেতাদের কথা বলার আহ্বান জানিয়েছে। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এই খবর জানিয়েছে।

এইচআরডব্লিউ বলেছে, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃত ফিলিস্তিনিদের খাদ্য, পানি ও অন্যান্য মৌলিক প্রয়োজন থেকে বঞ্চিত করছে। ক্ষুধাকে বেসামরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা একটি যুদ্ধাপরাধ।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বিবৃতি, বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার, সাহায্য সংস্থার প্রতিবেদন এবং স্যাটেলাইট ইমেজ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এমন দাবি করেছে সংস্থাটি। তাদের মতে, এই অভিযোগ স্পষ্টভাবে প্রমাণিত—‘বেঁচে থাকার জন্য দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় সব সম্পদ থেকে ফিলিস্তিনিদের বঞ্চিত করতে নীতিকে ইচ্ছামতো ব্যবহার করছে’ ইসরায়েল।

ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পরিচালক ওমর শাকির বলেছেন, ‘দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজার জনগণকে খাদ্য ও পানি থেকে বঞ্চিত করে চলেছে ইসরায়েল, যা ইসরায়েলি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দ্বারা অনুপ্রাণিত বা সমর্থিত একটি নীতিকে এবং বেসামরিক মানুষের ক্ষুধাকে যুদ্ধের একটি পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহার করার কৌশলকে প্রতিফলিত করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে বিশ্বনেতাদের কথা বলা উচিত। এটি গাজার জনগণের ওপর বিধ্বংসী প্রভাব ফেলেছে।’

বিবৃতিটি এমন সময় এলো যখন গাজা উপত্যকায় ‘নির্বিচার’ বোমাবর্ষণের ফলে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক চাপের মুখে পড়েছে ইসরায়েল।

সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, অঞ্চলটিতে ইসরায়েলি সেনাদের হাতে এখন পর্যন্ত ১৮ হাজার ৭৮৭ ফিলিস্তিনি নিহত ও আরও ৫০ হাজার ৮৯৭ জন আহত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে আরও হাজার হাজার মানুষ।

এইচআরডব্লিউ বলেছে, কৌশল হিসেবে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বক্তৃতা এবং বিবৃতি গাজার জনসংখ্যার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে প্রয়োজনীয় উৎস ব্যবহারে বাধা দেওয়ার প্রচারণা এই ইঙ্গিত দেয়—ইসরাইল তাদের এই উদ্দেশ্যগুলো গোপন করেনি।

এমনকি গাজায় ইসরায়েল আগ্রাসন শুরু করার পরপরই দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট নেতিবাচক মন্তব্য করে বলেছিলেন, ইসরায়েল ‘গাজাকে সম্পূর্ণভাবে অবরোধ করছে… সেখানে আছে না বিদ্যুৎ, না খাবার, না পানি, না গ্যাস—সবই বন্ধ।’ ফিলিস্তিনিদের ‘অমানুষ’ হিসেবে বর্ণনা করে নিজেদের আগ্রাসনকে সমর্থন করেন তিনি।

ওই বিবৃতিতে এইচআরডব্লিউ আরও বলেছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের নীতি অনুসারে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে ত্রাণ সরবরাহে বাধা দেওয়াসহ বেসামরিক নাগরিকদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় বস্তু থেকে বঞ্চিত করা’ একটি যুদ্ধাপরাধ।

দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে চলমান এ যুদ্ধে গাজার ২৩ লাখ মানুষের দুর্দশা সময়ের সঙ্গে বেড়েই চলেছে। এ সহিংসতার কারণে গাজার প্রায় ৭০ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

এদিকে, ইসরায়েলি সরকার এইচআরডব্লিউকে একটি ‘ইহুদিবিরোধী এবং ইসরায়েলবিরোধী’ সংস্থা বলে অভিযুক্ত করেছে।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিওর হায়াত এএফপিকে জানিয়েছেন, ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ… ইসরায়েলি নাগরিকদের ওপর হামলা এবং ৭ই অক্টোবরের গণহত্যার নিন্দা করেনি এবং ইসরায়েলিদের দুঃখ-কষ্ট ও মানবাধিকারের দিকে যদি চোখ না ফেরে তবে গাজায় কী ঘটছে তা নিয়ে তাদের কথা বলার কোনও নৈতিক ভিত্তি নেই।’

Facebook Comments Box

Posted ৪:৩৫ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩

ajkersangbad24.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক
ফয়জুল আহমদ
যোগাযোগ

01712000420

fayzul.ahmed@gmail.com