বৃহস্পতিবার ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>
হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু

মিনায় দোয়া-ইবাদতে মশগুল ২০ লাখ হাজি

অনলাইন ডেস্ক   |   শুক্রবার, ১৪ জুন ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   51 বার পঠিত

মিনায় দোয়া-ইবাদতে মশগুল ২০ লাখ হাজি

সৌদি আরবে সারা বিশ্ব থেকে জড়ো হওয়া প্রায় ২০ লাখ হজযাত্রী শুক্রবার (১৪ জুন) থেকে হজের যাবতীয় আচার অনুষ্ঠান শুরু করেছেন। মিনায় অবস্থানের মধ্য দিয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। এদিন সূর্যোদয়ের পর মিনায় রওনা করেছেন হাজিরা। সারাদিন এবং সারারাত সেখান অবস্থান করবেন। ৯ জিলহজ ফজর পর্যন্ত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মিনায় আদায় করা সুন্নত।

হাদিস শরিফে এসেছে, জাবের (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (স.) ৮ জিলহজ মিনায় গমন করেছেন এবং সেখানে জোহর, আছর, মাগরিব, এশা ও ফজর নামাজ পড়েছেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ৮/৪৭৮, হাদিস: ১৪৭৫৫; সহিহ মুসলিম: ১/৩৯৬)

৮ জিলহজ দিবাগত রাত মিনায় অবস্থান করা সুন্নত। আর এই দিনে জোহর থেকে ৯ তারিখ সকাল পর্যন্ত পুরো সময় এক নাগাড়ে সেখানে অবস্থান করা মোস্তাহাব। (গুনইয়াতুন নাসিক: ১৪৬; রদ্দুল মুহতার: ২/৫০৩; ফতোয়া খানিয়া: ১/২৯৩; আততাজরিদ: ৪/১৯৫৭; আলইখতিয়ার: ১/১৬০)
এছাড়াও মিনায় অবস্থানের পুরোটা সময় হাজিরা তালবিয়া, জিকির ও কোরআন তেলাওয়াতে মশগুল থাকেন। এখানে অবস্থানের প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান। অল্প সময়ও জিকির-আজকার থেকে বিরত থাকা উচিত নয়। তাই জিকির ও ইবাদতে মগ্ন থাকা মিনার অত্যন্ত জরুরি আমল। অনর্থক গল্প-গুজব থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।

মিনায় অবস্থানকালে বেশি বেশি তালবিয়া ‘লাব্বাইক আল্লাহুমা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা-শারীকা লাকা লাব্বাইক ইন্নাল হামদা ওয়ান্নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলুক লা-শরীকা লাক’ এবং আল্লাহু আকবার, সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু পড়া উচিত। সম্ভব হলে এ দোয়াটিও পড়া যেতে পারে- ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু; ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির।’ কারণ এই দোয়াকে হাদিসে সর্বোত্তম দোয়া এবং নবীজিসহ পূর্ববর্তী নবী-রাসুলের দোয়া বলা হয়েছে। (জামে তিরমিজি: ৩৫৮৫; শুআবুল ঈমান, বায়হাকি: ৩৭৭৮)
এই মিনাতে নবী (স.) মদিনাবাসীদের সঙ্গে দু’বার বৈঠক করেন এবং কালিমার দাওয়াত দেন। অতঃপর তারা মুসলমান হন। মদিনায় ইসলামের প্রচার-প্রসার ও দ্বীনি পরিবেশ প্রতিষ্ঠার মূল প্রক্রিয়াটি এখান থেকে সূচনা হয়। তাই মিনা থেকে দাওয়াতের কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করার জন্য নিয়ত করা উত্তম।

মক্কা থেকে আরাফার ময়দানের দিকে যাওয়ার মহাসড়কের পাশে মিনার অবস্থান। পবিত্র কাবা থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মিনা প্রান্তরের আয়তন প্রায় ২০ বর্গকিলোমিটার। হজযাত্রীরা কেউ বাসে, কেউ হেঁটে বা অন্য যানবাহনে মিনায় এসে পৌঁছান। মিনায় জোহর, আছর, মাগরিব, এশা এবং ফজরের নামাজ আদায় করে আরাফার ময়দানে উপস্থিত হবেন হাজিরা।
আজ শনিবার পবিত্র হজের প্রধান রোকন উকুফে আরাফাহ অনুষ্ঠিত হবে। এটাই মূলত হজ। এরপর ১০ জিলহজ মিনায় প্রত্যাবর্তনের পর শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ, আল্লাহর উদ্দেশে পশু কোরবানি, মাথা মুণ্ডন, তাওয়াফ জিয়ারত, এরপর ১১ ও ১২ জিলহজ প্রতীকী শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ এবং সবশেষে কাবা শরিফে বিদায়ী তাওয়াফের মধ্য দিয়ে শেষ হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা।

পবিত্র হজ পালনের জন্য ইতোমধ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে হজযাত্রীরা সৌদি আরব পৌঁছেছেন। এবার বিশ্বের ১৮০টির বেশি দেশের প্রায় ২০ লাখ মুসল্লি হজ পালন করছেন। বাংলাদেশ থেকে হজ পালন করবেন ৮৫ হাজার ২৫৭ জন।
আরাফার খুতবা বাংলায় অনুবাদ করবেন যারা
আরাফাতের ময়দান থেকে আরবিতে খুতবা পেশ করবেন মসজিদে হারামের ইমাম ও খতিব ড. মাহের বিন হামাদ আল-মুআইকিল।
এছাড়া আরাফাতে বাংলায় অনুবাদসহ খুতবা পেশ করবেন মক্কা উম্মুল কোরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মো. খলিলুর রহমান মাক্কী। এটি আগামী ৯ জিলহজ শনিবার অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে খলিলুর রহমান মাক্কীর বাড়ি বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলাস্থ হাইমচর উপজেলার কৃতি সন্তান। তিনি ২০২৪ সালের হজে আরাফার ময়দানে আরবি খুতবার বিপরীতে সরাসরি বাংলা ভাষায় অনুবাদ ও ভাষ্যকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।
পরদিন ১০ জিলহজ বাইতুল্লার অঙ্গনে অনুষ্ঠিত ঈদুল আজহার খুতবা পেশ করবেন মসজিদে হারামের ইমাম প্রফেসর ড. শাইখ আব্দুর রহমান আস সুদাইস।
ঈদের নামাজের আরবি খুতবার বাংলায় অনুবাদসহ পেশ করবেন মক্কা উম্মুল কোরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মুবিনুর রহমান ফারুক।
খুতবাতুল আরাফাতে হজের খুতবার বাংলা অনুবাদক ও ভাষ্যকর হিসাবে ২০২০ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত তৃতীয়বারের মতো দায়িত্ব পালন করেছিলেন বাংলাদেশের আরেক সন্তান মক্কা উম্মুল কোরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আ ফ ম ওয়াহিদুর রহমান মাক্কী।
বাংলা ভাষায় সম্প্রচারিত খুতবার এ প্রকল্পে বাংলাদেশে মোট চারজন দায়িত্ব পালন করেন। এর মধ্যে ড. মোহাম্মদ খলিলুর রহমান মাক্কী ২০২৪ সালের হজে আরাফার ময়দানে আরবি খুতবার বিপরীতে বাংলা ভাষায় অনুবাদ ও ভাষ্যকার করেন।
আ ফ ম ওয়াহিদুর রহমান মাক্কী, মক্কা আল মোকাররমা উম্মুল কোরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মুবি নুর রহমান বিন ফারুক, জেদ্দা আব্দুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স অধ্যয়নরত অনুবাদক নাজমুস সাকিব।

 

Facebook Comments Box

Posted ১০:১২ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১৪ জুন ২০২৪

ajkersangbad24.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

গরিবের হক যাকাত
(745 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক
ফয়জুল আহমদ
যোগাযোগ

01712000420

fayzul.ahmed@gmail.com