
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি | রবিবার, ০২ জুন ২০২৪ | প্রিন্ট | 47 বার পঠিত
ফাইল ছবি
আমতলীতে রিমালের তান্ডবে সরকারী হিসেবে ক্ষতির পরিমাণ ১৭৯ কোটি ৪৪ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কাঁচা পাকা সড়ক, বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ। এর পরে রয়েছে মৎস্য ও কৃষি বিভাগ।
আমতলী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রিমেলের তান্ডবের দুই দিনের মাথায় আমতলী উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ক্ষয়ক্ষতির পরিমান সরকারী ভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে টাকায় মোট ক্ষতির পরিমান দাড়িয়েছে ১৭৯ কোটি ৪৪ লক্ষ ৩০ হাজার ৫শ’ টাকা। এ হিসেবে সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে কার্পেটিং, পাকা, আধাপাকা এবং কাঁচা সড়কের। উপজেলায় মোট ৫৬৪ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতি গ্রস্ত হওয়ায় ৩০ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর পরে ক্ষতির তালিকায় দ্বিতিয় অবস্থানে রয়েছে উপকূলীয় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ। রিমেলের তান্ডবে ১২ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ১২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির তালিকার তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে মৎস্য সম্পদের। বাঁধ ধসে ও পানির তান্ডবে ২৬২৬৯ হেক্টর পুকুর ও ঘের তলিয়ে যাওয়ায় ৫ কোটি ৭৪ লক্ষ ১৫ হাজার টাকার মাছ ভেসে গেছে। ২৩৬৯ হেক্টর কৃষির ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতির পরিমান দাড়িয়েছে ১ কোটি ৯৪ লক্ষ ৩৯ হাজার টাকা। ২শ’ কিলোমিটার বিদ্যুতের তার ছিড়ে যাওয়ায় এবং ক্ষুটি উপড়ে পরায় ১কোটি ৫৮ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ১হাজার ৬০ হেক্টর জমির গাছ উপড়ে পরে ১ কোটি ৬ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ৮৩০টি কাঁচা ঘর সম্পূর্ন বিধস্ত এবং ১৪০২টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় টাকার পরিমান দাড়িয়েছে ৯ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকায়। বন্যাকবলিত হয়ে উপজেলায় ৫৫০ টি হাঁস মুরগী ভেসে গেছে এবং গরু মারা গেছে ৭টি। দুর্যোগে ২৮টি মসজিদ মন্দির এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮টি , মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩টি ও ৭টি মাদরাসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বালিয়াতলী গ্রামের বিধবা সাফিয়া বেগম বলেন, বইন্যায় মোর ঘরডা পইর্যা চুরমার অইয়া গ্যাছে। এহন মোর আর থাহোইন্যা জায়গা নাই। এহন মুই রৌদে হুগাই আর দেওয়ইতে ভিজি।
পশুরবুনিয়া গ্রামের ঘর বিধস্ত আলতাফ হোসেনও একই কথা বলেন, তিনি সরকারের নিকট ঘর তুলে দেওয়ার দাবী জানান।
বালিয়াতলী গ্রামের ইউপি সদস্য লতিফ মুন্সি বলেন, পায়রা নদী তীরবর্তী এই এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক ঘর বিধস্ত হয়েছে।
আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহেলী পারভীন মালা বলেন পায়রানদী তীরবর্তী পশুরবুনিয়া গ্রামের ধসে যাওয়া বন্যানিয়ন্ত্র বাঁধ মেরামতের কাজ এখনো শুরু না করায় বেশী ঝুঁকিতে রয়েছে নদী তীরবর্তী পশুরবুনিয়া, বালিয়াতলী, ঘোপখালী গ্রাম। গুলিশাখালী ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট মো. মনিরুল ইসলাম জানান, গুলিশাখালীর জেলেপাড়া, আঙ্গুলকাটা, এবং বৈটাকাটার বাঁধ জরুরী ভিত্তিতে সংস্কার করা প্রয়োজন। হলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিক জানান, হলদিয়া ইউনিয়ন বাসীকে বাঁচানোর জন্য জরুরী ভিত্তিতে জুলেখার স্লুইস গেট নির্মান এবং সোনাউটা বন্যানিয়ন বাঁধ সংস্কার প্রয়োজন।
আমতলী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামাল হোসাইসন জানান, পৌরসভা মেয়র, ইউপির চেয়ারম্যানদের তথ্যের ভিত্তিতে ক্ষতির পরিমান নিরুপন করা হযেছে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম জানান, রিমালের তান্ডবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরুপন করে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে দুর্যোগ ব্যবস্থপনা অধিদপ্তর, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রান মন্ত্রনালয়ের জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বরাদ্দ পাওয়া গেলে ক্ষতিগ্রস্তদের পুন:বাসন, সড়ক বাঁধ নির্মান কাজ শুরু করা হবে।
Posted ৮:২৬ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০২ জুন ২০২৪
ajkersangbad24.com | Fayzul Ahmed