অনলাইন ডেস্ক | বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ | প্রিন্ট | 66 বার পঠিত
কয়েকশ কোটি টাকার কেনাকাটায় অনিয়মের অভিযোগে রাজশাহীতে থাকা রেলভবনে (পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সদর দপ্তর) অভিযান পরিচালিত হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ অভিযান চালায়।
ঘণ্টাব্যাপী চলা এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন দুদক রাজশাহী জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন। তার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি দল এ অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযান পরিচালনাকালে দুদক কর্মকর্তারা পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপকের (জিএম) সঙ্গে কথা বলেন এবং এ সংক্রান্ত বিভিন্ন নথিপত্র দেখতে চান। কিছু নথিপত্র পান আরও কিছু নথিপত্র তলব করেন। পরে সেগুলো আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই দুদক কার্যালয়ে পাঠানোর কথা জানান পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জিএম।
এর আগে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভিন্ন কেনাকাটায় কয়েকশ কোটি টাকা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। আর অনিয়মের বিষয়টি নিজস্ব অডিট আপত্তিতেও উঠে আসে। সেই অভিযোগ ও অডিট আপত্তির প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে আজ জেলা কার্যালয় অভিযান চালায়।
দুদক রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন জানান, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভিন্ন মালামাল ক্রয় সংক্রান্ত কেনাকাটার অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সকালে এ অভিযান পরিচালিত হয়। তারা এখান থেকে সংশ্লিষ্ট কিছু নথিপত্র সংগ্রহ করেছেন। আরও কিছু নথিপত্র তলব করেছেন। পরবর্তী সময়ে এগুলো হাতে পেলে সব রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করা হবে। এরপর তারা তা কমিশনে অবহিত করবেন।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসিম কুমার তালুকদার জানান, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের কেনাকাটা সংক্রান্ত বিষয়ে আজ তার কার্যালয়ে দুদক কর্মকর্তা এসেছিলেন। তারা যেসব নথিপত্র দেখতে চেয়েছেন সেগুলো দেখানো হয়েছে এবং দেওয়া হয়েছে। আরও কিছু নথিপত্র চেয়েছিলেন। কিন্তু তারা হঠাৎ আসায় সব কাগজপত্র প্রস্তুত ছিলনা। তবে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই সেগুলো দুদক কার্যালয়ে পাঠানো হবে বলেও জানান।
এদিকে অনিয়মের অভিযোগে উঠে এসেছে যে, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের কেনাকাটায় একটি প্লাস্টিকের প্যাডেলযুক্ত ময়লা ফেলার ঝুড়ি (প্যাডেল ডাস্টবিন) কেনার কথা ৩৩৮ টাকায়; কিন্তু একেকটি ডাস্টবিন কেনা হয়েছে ১৩ হাজার টাকা দরে। একইভাবে বাড়তি দাম দেখিয়ে ৪৮৬ টাকার প্রতিটি হ্যাকসো ফ্রেম (ধাতু কাটার করাত) কেনা হয়েছে ৩ হাজার ৪৫০ টাকা দরে। আর প্রতিটি স্লাই রেঞ্চ কেনার কথা ৮৭৮ টাকায়; কিন্তু কেনা হয়েছে ৪ হাজার ৪৫০ টাকা দরে। একই উপায়ে ৩৫০ টাকার একেকটি কোদাল কেনা হয়েছে ২ হাজার টাকায়, ৩১৩ টাকার বালতি ১ হাজার ৯০০ টাকায়, ২০০ টাকার তালা ৫ হাজার ৬০০ টাকায়।
এছাড়া ১ হাজার ৬৫০ টাকার পর্দা অতিরিক্ত ১৮ হাজার টাকা দিয়ে কেনা হয়েছে।
এর আগে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের হাসপাতালগুলোতে কেনাকাটা খাতে ৭ কোটি ২০ লাখ টাকার অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ২০২৩ সালের ১৫ জানুয়ারি রেলভবনে অভিযান চালায় দুদক। সেই সময় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিও নিয়ে যান দুদক কর্মকর্তারা।
Posted ৮:১১ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
ajkersangbad24.com | Fayzul Ahmed