গাজীপুর প্রতিনিধি | রবিবার, ১৮ আগস্ট ২০২৪ | প্রিন্ট | 54 বার পঠিত
ছাত্র–জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন বিকেলে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গণমিছিলে অংশ নিয়েছিলেন পোশাকশ্রমিক মো. আয়াতুল্লাহ। এর পর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। ১১ দিন পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়কের সহায়তায় রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে তার লাশ পেয়েছেন স্বজনেরা।
নিহত আয়াতুল্লাহর বাড়ি সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার চামরদানী ইউনিয়নের জলুষা গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের কৃষক মো. সিরাজুল ইসলামের ছেলে। শুক্রবার রাতে হাসপাতালের মর্গে গিয়ে তার লাশ শনাক্ত করেছেন তার বড় ভাই সোহাগ মিয়া।
এলাকাবাসী ও স্বজনেরা জানান, মধ্যনগরের জলুষা গ্রামের সোহাগ মিয়া (৩২) চার বছর ধরে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে একটি পোশাক কারখানায় অপারেটর পদে চাকরি করেন। মাসখানেক আগে তার ছোট ভাই আয়াতুল্লাহ আরেকটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ নেন। ৫ আগস্ট বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তিনি গাজীপুরের সফিপুর আনসার একাডেমির সামনে গণমিছিলে অংশ নিয়ে নিখোঁজ হন। ওই দিন আনসার একাডেমির সামনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। এরপর তার বড় ভাই সোহাগ মিয়া গাজীপুরসহ আশপাশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি।
নিহতের পরিবার জানায়, শুক্রবার (১৬ আগস্ট) রাত নয়টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুজন সমন্বয়কের সহায়তায় সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে গিয়ে ছোট ভাইয়ের লাশ শনাক্ত করেন সোহাগ মিয়া। শনিবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের কাছে আয়াতুল্লাহর লাশ বুঝিয়ে দেয়।
চামরদানী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য উজ্জ্বল মিয়া বলেন, ‘আয়াতুল্লাহ সম্পর্কে আমার আত্মীয়। তাদের পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে শোকের মাতম চলছে। শত বুঝিয়েও তার মা–বাবার কান্না থামানো যাচ্ছে না। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার চাই।’
আয়াতুল্লাহ সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার চামরদানী ইউনিয়নের জলুষা গ্রামের মো. সিরাজুল ইসলামের ছেলে। সে তার বড় ভাই সোহাগের সঙ্গে কালিয়াকৈরের জামতলা এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকত। আয়াতুল্লাহ কালিয়াকৈরের ভান্নারা বাজার এলাকায় মাখলাজুল ইমান নামে একটি মাদরাসায় পড়াশোনা করার পাশাপাশি একটি টেক্সটাইল মিলে কাজ করত।
আয়াতুল্লাহর বড় ভাই সোহাগ মিয়া বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন হওয়ার পর আনন্দ মিছিলে গিয়ে আনসার বাহিনীর গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিখোঁজ হয় আয়াতুল্লাহ।বহু জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গে আয়াতুল্লাহ’র লাশের সন্ধান মিলেছে।
তিনি ও তার পরিবার আয়াতুল্লাহর হত্যার বিচার দাবি করেন।
মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি শেরেবাংলা নগর থানার অধীনে। ওই পোশাকশ্রমিকের লাশ শনাক্তকরণে সহায়তা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দুজন সমন্বয়ক। তাদের সঙ্গে তার (ওসি) কথা হয়েছে।
Posted ১০:১৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৮ আগস্ট ২০২৪
ajkersangbad24.com | Fayzul Ahmed