অনলাইন ডেস্ক | বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট | 73 বার পঠিত
এক মাস পরেই মা হবেন। তাই মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়ে স্বামীর সাথে লালমনিরহাটে বাবার বাড়ি আসছিলেন ট্রেনযোগে মনোয়ারা বেগম। আসার পথে ট্রেনেই ছেলে সন্তানের মা হলেন তিনি।
লালমনিরহাটগামী লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনে টাঙ্গাইল স্টেশনের অদূরে মঙ্গলবার ভোরে সন্তানকে জন্ম দেন তিনি। কাকতালীয়ভাবে ট্রেনে একজন চিকিৎসক থাকায় সন্তান জন্ম দিতে বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়নি সেই প্রসূতিকে।
কুমিল্লায় মাদকসহ নারী আটক
মনোয়ারা বেগম নারায়ণগঞ্জ থেকে স্বামীর সঙ্গে বাবার বাড়ি লালমনিরহাটে ফিরছিলেন। সোমবার দিবাগত মধ্যরাতে কমলাপুর থেকে ‘লালমনি এক্সপ্রেস’ ট্রেনে করে তারা রওনা দেন। মনোয়ারা বেগমের স্বামী আনারুল ইসলাম পেশায় একজন রডমিস্ত্রি। স্বামীর সাথে থেকে ওই এলাকায় চাকরি করেন মনোয়ারা বেগম।
জানা গেছে, স্ত্রী মনোয়ারা বেগম ও এক সন্তানকে নিয়ে এতদিন নারায়ণগঞ্জে ছিলেন তিনি। আবারও তার স্ত্রী সন্তানসম্ভাবা হওয়ায় চিকিৎসকের দেয়া প্রসবের সম্ভাব্য তারিখের এক মাস আগেই মনোয়ারার বাবার বাড়ি লালমনিরহাটের উদ্দেশে রওনা দেন।
লালমনি এক্সপ্রেসর টিটিই জাকিরুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ বগিতে চিৎকার শুনে সেখানে গিয়ে দেখি তার প্রসববেদনা উঠেছে। পরে তাকে সাহায্যের জন্য অন্যান্য নারীযাত্রী, রেলওয়ে পুলিশসহ সকলেই এগিয়ে আসে। ভাগ্যক্রমে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. জহির উদ্দিন মো. বাবরকেও আমরা সেখানেই পেয়ে যাই।
মনোয়ারা বেগম বলেন, এমনটি হবে এটা আমি বুঝতে পারিনি। তবে ট্রেনে অনেক মানুষের সাহায্যে আমি বেঁচে গেছি। তাদের কথা আমি কোনো দিন ভুলতে পারবো না।
জানা গেছে, সদ্য জন্ম নেয়া শিশু ও মায়ের স্বাস্থ্যগত কোনো সমস্যা না থাকায় মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যার দিকে উল্লাপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। পরে বুধবার সকালে মনোয়ারা বেগমের বাবার বাড়ি লালমনিরহাট শহরের শাহজাহান কলোনিতে চলে আসেন।
মনোয়ারার স্বামী আনারুল ইসলাম বলেন, আল্ট্রাসনোগ্রামসহ নানা পরীক্ষার পর চিকিৎসক সম্ভাব্য প্রসবের দিন আগামী ২৮ ডিসেম্বর বলে জানিয়েছিলেন। তাই একমাস আগেই স্ত্রীকে বাবার বাড়িতে নিয়ে আসছিলাম নিরাপদ প্রসবের জন্য। কিন্তু ট্রেনেই আমার ছেলের জন্ম হয়।
লালমনিরহাট রেলওয়ে থানার পরিদর্শক ফেরদৌস আলী জানান, প্রসবের পর চিকিৎসকের পরামর্শে মা-সন্তানকে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া স্টেশনে নামিয়ে স্থানীয় থানা পুলিশের টহল গাড়িতে তুলে দেয়া হয়। পরে তাদের সেখানকার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. জহির উদ্দিন বাবর বলেন, আমি কাজ শেষে পাটগ্রামে ফিরছিলাম। ঘটনা শোনামাত্র আমি এগিয়ে যাই সেখানে। বাচ্চাটা প্রসবের পর ‘জরায়ুর ফুল (প্ল্যাসেন্টা)’ সম্পূর্ণ আটকে ছিল। এটা দ্রুত বের করতে না পারলে রক্তক্ষরণের কারণে মায়ের মৃত্যু হতে পারে। ফলে সেটা আমার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে অনেকটা চ্যালেঞ্জিং ছিল। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করে আমি তা নিরাপদে বের করতে সক্ষম হই।
Posted ৫:১৫ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩
ajkersangbad24.com | Fayzul Ahmed