অনলাইন ডেস্ক | বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ | প্রিন্ট | 64 বার পঠিত
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কানায় বিদেশী শিক্ষার্থীর সংখ্যা অধিকহারে বেড়ে যাওয়ায় দেশটির আবাসন সংকট আরও তীব্র হয়ে ওঠে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় গত সোমবার (২২ জানুয়ারি) নতুন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভর্তি অনুমোদনের ওপর দুই বছরের বিধিনিষেধ আরোপের ঘোষণা দিয়েছে কানাডা। এই সময়ে সীমিত সংখ্যায় ভর্তির অনুমোদন দিয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কমিয়ে আনা হবে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
সরকারি তথ্য অনুসারে, গত বছর প্রায় ১০ লাখ বিদেশি শিক্ষার্থীকে ভর্তি অনুমোদন দিয়েছে কানাডা। যা গত এক দশক আগের তুলনায় প্রায় তিনগুণ। নতুন প্রস্তাবে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা অনুমোদনের হার প্রায় ৩৫ শতাংশ (প্রায় এক-তৃতীয়াংশ) কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নতুন পরিকল্পনাগুলো যেভাবে কাজ করবে
কানাডার অভিবাসন মন্ত্রী মার্ক মিলার বলেছেন, উদারনৈতিক সরকার নতুন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের স্টাডি পারমিটের ওপর দুই বছরের একটি অস্থায়ী ক্যাপ চালু করবে। ফলে ২০২৪ সালে কানাডা প্রায় ৩ লাখ ৬৪ হাজার নতুন শিক্ষার্থীকে ভর্তি হওয়ার অনুমতি পাবে।
এই প্রস্তাবের আওতায় কিছু প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া বিদেশি স্নাতক শিক্ষার্থীদের ওয়ার্ক পারমিটের সংখ্যাও সীমিত করা হবে। এই পারমিটগুলোকে কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য একটি সহজ পন্থা হিসেবে দেখা হয়। তবে যারা মাস্টার্স বা পোস্ট-ডক্টরেট প্রোগ্রামে পড়াশোনা করছেন তাদেরকে তিন বছরের ওয়ার্ক পারমিট দেওয়া হবে।
মিলার আরও জানিয়েছেন, স্নাতক বা কলেজসহ অন্যান্য স্তরের পড়াশোনা করছেন এমন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জীবনসঙ্গীদের ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার সুযোগ থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, ২০২৫ সালে নতুন স্টাডি পারমিটের অনুমোদনের বিষয়টি চলতি বছরের শেষে পুনর্মূল্যায়ন সাপেক্ষে হবে।
কেন এই পদক্ষেপ নিচ্ছে কানাডা সরকার?
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য হিসেবে পরিচিত কানাডা। কেননা কোর্স শেষ করার পর সেখানে ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া তুলনামূলকভাবে সহজ। তবে দেশটিতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী বেড়ে যাওয়ায় আবাসন সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। একইসঙ্গে বেড়ে বাসা ভাড়াও।
স্ট্যাটস্ক্যানের তথ্যানুসারে, গত ডিসেম্বরে দেশব্যাপী ভাড়া এক বছর আগের তুলনায় ৭ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে।
মূলত ক্রয়ক্ষমতাজনিত সমস্যার কারণে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর জনপ্রিয়তা অনেক কমে গেছে। আগামী বছর দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া কথা রয়েছে। এর আগে করা একটি জনমত জরিপে দেখা গেছে, জনপ্রিয়তার দিকে ট্রুডোর চেয়ে অনেক এগিয়ে বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টির নেতা পিয়েরে পোইলিভরে।
আবাসন সংকট ছাড়াও কিছু প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান নিয়েও উদ্বিগ্ন সরকার।
এতে প্রভাবিত হবেন যারা
কানাডার অর্থনীতিতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা বছরে প্রায় এক হাজার ৬৪০ কোটি ডলারের অবদান রাখে। কানাডা সরকারের এমন পদক্ষেপ দেশটির অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে প্রভাবিত করবে। বিশেষ করে ওই সব প্রতিষ্ঠানকে যারা দেশটিতে ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর আশায় তাদের ক্যাম্পাসের পরিসর বড় করেছে।
কানাডার সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ অন্টারিও। সেখানে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় অংশ রয়েছে। রেস্তোরাঁ এবং খুচরাবাজারের মতো কিছু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সতর্ক করে বলেছে, বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা সীমিত করার কারণে অস্থায়ী শ্রমিকের ঘাটতি তৈরি হতে পারে।
Posted ১২:০৫ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারি ২০২৪
ajkersangbad24.com | Fayzul Ahmed