অনলাইন ডেস্ক | রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪ | প্রিন্ট | 34 বার পঠিত
রাজধানীর তুরাগের বাউনিয়ায় শনিবার (৫ অক্টোবর) বিএনপি নেতা হাজী মোস্তফা জামানের পক্ষ থেকে একটি প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিধি হিসেবে মঞ্চে ছিলেন মোস্তফা জামান। ওই সভার মঞ্চে সালাউদ্দিন আহমেদ খোকা, হাজী জহির, আজাহারুল ইসলাম আজাসহ কয়েকজন পদধারী বিএনপি নেতা উপস্থিত থাকলেও সভা মঞ্চে অন্য যারা ছিলেন তাদের অনেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
স্থানীয়রা বলছেন সভায় উপস্থিত হওয়া মানুষদের ৫০ শতংশই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। শনিবারের এ সভাটি নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাদের অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রল করছেন এবং বিভিন্ন ভাবে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা গেছে, যেসব নেতা বা শ্রোতা মিটিং এ উপস্থিত ছিলেন তাদের অধিকাংশই তিন মাস আগেও আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি হাবিব হাসানের পক্ষে মিটিং মিছিলে বেশ সক্রিয় ছিলেন। রাজনৈতিক পালাবদলের পর তারা এখন বিএনপি নেতার মিটিংয়ের মূল নেতৃত্বে ছিলেন বলে অভিযোগ স্থানীয় বিএনপির অনেকের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপি এক নেতা বলেন, গতকাল হাজী মোস্তফা জামান যে প্রতিবাদ সভাটি করেছেন সেখানে উপস্থিতির ৫০ ভাগই আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন দুই মাস আগেও। তারা এখন ভোল পাল্টিয়ে বিএনপির মিটিংয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
স্থানীয় এ নেতা আরো বলেন, রাজধানী তুরাগের বাউনিয়া এলাকাটি ফ্যাসিবাদ সরকারের সাবেক এমপি ও উত্তরার ছাত্র-জনতা হত্যার মূল নায়ক হাবিব হাসানের নিজ গ্রাম এবং তার নানাবাড়ী এলাকা হওয়ায় বিএনপির তেমন কোন কার্যক্রম গত ১৮ বছরে পরিচালনা করা যায়নি। সামান্য কিছু বাসিন্দা যারা বিএনপি মনা ছিলেন তারাও আওয়ামী লীগের সাথে মিল মিশে একাকার ছিলেন। কিন্তু মিটিংয়ের পর দেখা গেছে সম্পূর্ন বিপরিত চিত্র। প্রতিবাদ মঞ্চের মুল ডাইসে বসা ছিলেন আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন পদধারী নেতা। তাদের অন্যতম হচ্ছে, আশরাফ খান বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের তুরাগ থানার সাধারণ সম্পাদক, সোহেল রানা আওয়ামী যুবলীগ, সানাউল্লাহ আওয়ামী যুবলীগ, ইসহাক খুনি হাবিব হাসানের বোনের জামাই, ইসলাম উদ্দিন কৃষক লীগ তুরাগ থানার ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক, স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাশালী নেতা সেলিম মাদবর, স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগের নেতা হাজী আব্দুল্লাহ ও আশরাফ খান। তারা সবাই হাবিব হাসানের আত্মীয় এবং শুভাকাঙ্ক্ষী। এর বাইরে ছিলেন বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া আবু তাহের আবুল খানসহ অনেকেই। প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত শ্রোতাদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকের বেশী লোক ছিলেন খুনি হাবিব হাসানের নিকট আত্মীয় স্বজনরাই।
উল্লেখ্য, বিএনপি নেতা হাজী মোস্তফা জামানের বিরুদ্ধে তুরাগ এলাকার বিভিন্ন জায়গা হুমকি ধামকি, দখল চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার যৌথবাহিনীর পক্ষ থেকে তাকে সর্তকও করা হয়েছে। এছাড়া গত ১৮ বছর যারা আওয়ামী লীগের হয়ে এলাকায় মাতবরি করেছেন, নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের নিয়ে দলভারি করার শক্ত অভিযোগ আছে। তিনি মহানগর বিএনপির সদ্য সাবেক সদস্য সচিব আমিনুল হকের কাছের লোক হওয়ায় কোন অভিযোগের বিষয়ে তোয়াক্কা করছেন না বলে স্থানীয় নেতাদের অভিযোগ।
জানতে চাইলে হাজী মোস্তফা জামান বলেন, তুরাগ বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেনসহ স্থানীয় কিছু বিএনপি নেতাকর্মী ওই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেছিল। সেখানে আমি শুধুই গেস্ট হিসেবে গিয়েছিলাম। সমাবেশে অতিথি কিংবা অংশগ্রহণকারীরা কে, কোন দল করে তা আমি খুব ভালো করে চিনি না। তবে আওয়ামী লীগের কেউ বা ফ্যাসিস্টদের দোসর কেউ যদি সেখানে থেকে থাকে, তাহলে সেটা মোটেও ঠিক হয়নি।
Posted ৯:৫৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪
ajkersangbad24.com | Fayzul Ahmed