গাজীপুর প্রতিনিধি | রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪ | প্রিন্ট | 41 বার পঠিত
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙ্গিয়ে অবৈধভাবে ফসলি জমি, নদ-নদীর তীর থেকে মাটি কেটে ইটভাটাসহ বিভিন্ন কলকারখানায় পাচার করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা আদায় করার পরও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাতের আধারে চলছে মাটিকাটার মহোৎসব।
অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার সূত্রাপুর ইউনিয়ের টালাবহ রেলব্রিজের দক্ষিণপাশে নয়ানগর মৌজায় ফসলি জমি থেকে
ভোঙ্গাবাড়ি রেলব্রিজের পশ্চিমে রেললাইনের দক্ষিণ পাশে ঘাটাখালি নদী ও রেললাইনের জমি থেকে, দড়বারিয়া এলাকায় ঘাটাখালি নদী, ডুবাইল এলাকায় বংশী নদীর তীর থেকে, পাকুরাইল এলাকায় দুই ফসলি জমি, ভোঙ্গাবাড়ি এলাকায় ঘাটাখালি নদীরতীর, বেগুনবাড়ি এলাকায় দুই ফসলি জমি, নামা বড়ইবাড়ি এলাকায় দুইটি স্পটে তুরাগ নদীর তীর থেকে, নামা বড়ইবাড়ি মাঝিপাড়া এলাকায় তুরাগনদীর তীর থেকে, ফুলবাড়িয়া ইউনয়নের কাঁচিঘাটা এলাকায় ফসলি জমি থেকে, বোয়ালি ইউনিয়নের নলুয়া এলাকায় বান্দাবাড়ি আশ্রয়ন প্রকল্পের পুর্বপাশে দুই ফসলি জমি থেকে, বাশঁতলী এলাকায় তুরাগ নদীর তীর থেকে দিনে ও রাতে নির্বিঘ্নে মাটিকাটা হচ্ছে। এসব মাটি ডাম্প ট্রাকযোগে স্থানীয় ইটভাটাসহ বিভিন্ন কলকারখানায় বিক্রি করা হচ্ছে। মাটি পরিবহনে ডাম্পট্রাক ব্যবহার করায় ইউনিয়ন ও গ্রামীণ সড়ক হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্থ। গভীর গর্তকরে মাটিকাটার ফলে তিন ফসলি কৃষি জমি পুকুর ও ডুবায় পরিণত হচ্ছে। দিনদিন কৃষিজমি বিলুপ্ত হচ্ছে, ফসলের উতপাদন কমছে, বেকার হচ্ছে কৃষক, পরিবেশ হচ্ছে দুষিত।
ডাম্পট্রাক চলাচলের জন্য উপজেলার নয়ানগর রেলব্রিজের উত্তর পাশে বংশি নদীতে অবৈধভাবে মাটি ফেলে বাধদিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। অবাধে মাটিভর্তি ট্রাক চলাচলের কারণে উপজেলার সোনাখালি-বাজহিজলতলী সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সড়কের বিভিন্ন স্থান ইতিমধ্যেই ডেবে গেছে। একহাটু ধুলা-বালি ও গর্তের কারণে এলাকার লোকজন বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঐ সড়কের পরিবর্তে রেললাইন দিয়ে যাতায়াত করছে বলে সরজমিনে দেখা যায়। গভীর গর্তকরে মাটিকাটার কারণে উপজেলার ডুবাইল এলাকায় একটি মসজিদ, উপজেলার বাশঁতলি এলাকায় কালিয়াকৈর-বড়ইবাড়ি আলিক সড়ক হুমকির মুখে পড়েছে বলে এলাকাবাসী জানান। মাটিভর্তি ডাম্পট্রাক চলাচলের জন্য উপজেলার বোয়ালি ফরেস্ট বিটের নলুয়া এলাকায় বনবিভাগের সরকরারি জমির উপর দিয়ে মাটি ব্যবসায়িরা অবৈধভাবে রাস্তা নির্মাণ করেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, জমির উপরিভাগের ১০ ভাগের ১৫. ইঞ্চির মধ্যে থাকে পলিমাটি। একে মাটির প্রাণ বলে। মাটিকাটার ফলে জমির উর্বরতা শক্তি কমে যাচ্ছে। যা পুরণ করতে অন্তত ১৫ বছর সময় লাগে। তাই জমিতে ভালো ফসল পেতে হলে জমির উপরিভাগের মাটি কেটে নেয়া কোনভাবেই ঠিক হবে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহাম্মেদ জানান, এসব অবৈধ মাটিকাটা বন্ধে খুব দ্রুত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।
Posted ১:০১ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪
ajkersangbad24.com | Fayzul Ahmed