অনলাইন ডেস্ক | শনিবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট | 70 বার পঠিত
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া তৃনমূল বিএনপির নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ এনেছেন দলের ৬০ প্রার্থী।
তারা বলেছেন, আমরা নির্বাচনী ধারা অব্যাহত রাখার জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। জাতীয় বেইমান দলের চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার ও অন্তরা হুদা তাদেরকে নির্বাচনে নামিয়ে এখন আর খোঁজ রাখেন না। তারা নির্বাচনী মাঠে নামিয়ে এখন সম্পূর্ণ যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন।
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক আলোচনায় ৬০ প্রার্থীর পক্ষে এ অভিযোগ জানানো হয়।
৬০ জন প্রার্থী বলেন, আমরা বিশেষ সংবাদ মাধ্যমে জানতে পেরেছি তৃণমূল বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিএনপির সাথে আঁতাত করে তৃণমূল বিএনপির সকল প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে এনে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে।
এসময় তৃণমূল বিএনপি থেকে যশোর-৫ আসনের প্রার্থী মোস্তফা গণি বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে একাত্মতা ঘোষণা করে যে নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রত্যয় ব্যক্ত করতে যাচ্ছি। সেখানে প্রচণ্ড বাধা সৃষ্টি করেছেন শমসের ও তৈমুর আলম খন্দকার। তারা আমাদের সঙ্গে নজিরবিহীন অসমন্বয় করে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। আমাদের অভিভাবক হিসেবে প্রধানমন্ত্রী আপনি এর বিচার করুন। আমরা দলের কোনো বিচ্ছিন্ন অংশ নই।
তিনি বলেন, আপনারা যদি আজকে শমসের ও তৈমুর আলমকে জিজ্ঞেস করেন তারা বলবে, দলে বিচ্ছিন্ন অংশ ষড়যন্ত্র করছে। আমি মেজর গণি বলতে চাই, আমরা দলের কোনো বিচ্ছিন্ন অংশ নই। দলের যারা অবহেলিত সংসদ সদস্য প্রার্থী তাদের পক্ষ থেকে কথা বলতে দাঁড়িয়েছি। তৈমুর-শমসের ও অন্তরা হুদা আমাদের নির্বাচনের মাঠে দাঁড় করিয়ে যে তামাশা করছেন, জাতির কাছে তার হিসাব দেন।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি আমাদের সমস্যা সমাধান না করেন তাহলে আমরা কঠোর হতে বাধ্য হবো এবং আমরণ অনশনে যেতে বাধ্য হবো।
ময়মনসিংহ ৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী দীপক চন্দ্রগুপ্ত বলেন, আমাদের দলের চেয়ারম্যান মহাসচিব শুরু থেকেই বলেছেন সর্বপ্রকার সাহায্য সহযোগিতা আমাদের করবে। গত কয়েকদিন আগে ২৬ তারিখে তারা আমাকে ডেকে এনে বসিয়ে রেখেছেন। সেদিন থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে কোন যোগাযোগ নেই। নির্বাচনের দিক নির্দেশনা তাদের কাছ থেকে পাচ্ছিনা। কি করবো না করবো, কিছুই বুঝতে পারছি না। এতিমের মতো অবস্থায় আছি। আমরা মাঝ পথে এসে জানতে পেরেছি তারা অন্য দলের সাথে সম্পর্কিত হয়ে নির্বাচন বাঞ্চাল করার জন্য চেষ্টা। আমাদের নির্বদচনী যে ফান্ড, সেটার কোন খবর পাচ্ছি না। আমাদের সাহায্য সহযোগিতা না করে তারা গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে। ফলে আমরা নির্বাচনে বিতর্ক অবস্থার মধ্যে পরেছি।
সভার সভাপতি ঢাকা-১৫ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী খন্দকার এমদাদুল হক সেলিম বলেন, আমাদের সভাপতি-মহাসচিব কোন যোগাযোগ রাখেন না। আমরা কিভাবে আছি না আছি, মাঠে নির্বাচনের অবস্থা কি তার কোন খোঁজ রাখছেনা। আমাদের সভাপতি-মহাসচিব বিএনপি থেকে বস্কিত হয়েছেন এখন তারা আমাদের তৃণমূল বিএনপির সভাপতি-মহাসচিব। উনাদের উদ্দেশ্য আমরা এখন যেটা বুঝতে পারছি, অন্যান্য দলের সঙ্গে উনার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়তা বজায় রেখেছেন। উনারা অন্তরে এক কথা বলেন মুখে আরেক কথা বলেন। উনারা মুখে বলেন আমরা তৃণমূল বিএনপি’র সভাপতি মহাসচিব আমরা সারা বাংলাদেশের জয়লাভ করে রাখ। জয় লাভ তো উনারা করবেন না, জয় লাভ করবে ১৩৭ জন। আমাদের চেয়ারম্যান ও মহাসচিব তৃণমূল বিএনপির যে অবস্থা তৈরি করেছেন তাতে আমরা খুব কষ্ট পাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, আমাদের বর্তমানের যে অবস্থা সেই অবস্থায় আমাদের বর্তমান সভাপতি ও মহাসচিব কে বহিষ্কার করে নতুন সভাপতি ও মহাসচিব যদি আনা যায় তাহলে জনগণ খুশি হবে। আমাদের দলের এই মুহূর্তে প্রার্থী আছে ১৩৭ জন। আমি মনে করি দুইজনকে বাদ দিয়ে ১৩৫ জনই আমাদের সঙ্গে আছে।
এসময় তৃণমূল বিএনপির এই প্রার্থীরা সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে এই সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
আলেচনায় আরও বক্তব্য রাখেন বরগুনা-২ আসনের ইউনূস সোহাগ, কুমিল্লা-২ আসনের মো. মাঈনুদ্দিন কুমিল্লা, নেত্রকোনা-৪ আসনের আল মামুন, নেত্রকোনা-৫ আসনের আব্দুল ওয়াহাব হামিদী, ঢাকা-৬ আসনের কাজি সিরজুল ইসলাম, মাগুরা-১ আসনের সঞ্জয় রায় রনি, মাদারীপুর-৩ আসনের প্রবীন হালদার প্রমুখ।
Posted ১২:৩৩ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩
ajkersangbad24.com | Fayzul Ahmed