অনলাইন ডেস্ক | রবিবার, ০৯ জুন ২০২৪ | প্রিন্ট | 71 বার পঠিত
সিলেটে ভিটেমাটি দখলের জন্য প্রতিবন্দী পরিবারের এক সদস্যকে অপহরণের পর ধর্ষণ ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে আপন চাচাত ভাইদের বিরুদ্ধে।
রোববার (৯ জুন) দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৪০নং ওয়ার্ডের কুচাই মাঝরপাড়া গ্রামের মৃত ইদরিস আলীর মেয়ে ফাতিমা বেগম।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে তার অভিযোগ, দীর্ঘদিন থেকে তাদের ভিটেমাটি ছাড়া করে তাদের ঘরবাড়ি দখলে মরিয়া ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তারই আপন চাচাত ভাই একই ঠিকানার মৃত লতিফ আলীর ছেলে অপু আহমদ, তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম ভাই লিটু আহমদ ও মা খাদিজা বেগম। সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবেই গত মার্চে বাচ্চাদের ঝগড়া বিবাদকে কেন্দ্র করে মিথ্যা অভিযোগে তারা মোগলাবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় তার একমাত্র প্রতিবন্দী ভাই জাহাঙ্গীর মিয়া ২২ দিন কারাগারের অন্ধপ্রকোষ্টে অমানবিক কষ্টে দিন কাটিয়ে পরে জামিনে মুক্তি পান। শুধু তাই নয়, তারা তার ১৫ বছরের কিশোর বোনপোসহ ফাতিমাকেও আসামি করেছিল। অবশ্য এ মামলায় বর্তমানে তারা সবাই জামিনে রয়েছেন।
ফাতিমার অভিযোগ, তার ভাইয়ের জামিনের ব্যাপারে উকিলের সঙ্গে আলাপ করে বাড়ি ফেরার পথে গত ৯ এপ্রিল বিকেল ৪টার দিকে পালপুর গেইটের কাছে কুচাই মাঝরপাড়া রাস্তায় তিনি ও তার বোন হাওয়ারুন নেসার উপর হামলা চালায় চাচাত ভাই অপু ও লিটু। এসময় তারা তার বোনের গহনা ও কাপড়চোপড় ছিনিয়ে নিয়ে দ্রæত পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাদের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় ২২ এপ্রিল তারা মোগলাবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি।
এরপর গত ২৫ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে গোলাপগঞ্জের হাজিপুর শুকনা গ্রামের তাদের তালইরবাড়ি থেকে ফেরার পথে সিলেট জকিগঞ্জ রোডে অপু তার বন্ধু সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৪০নং ওয়ার্ডের সারপিং গ্রামের শাহজাহান আহমদ কয়েছের ছেলে মানিককে নিয়ে ফাতিমা ও তার বোন হাওয়ারুনের উপর হামলা করে। তাদের সঙ্গে ছিলেন শাহপরাণ থানার পীরেরচক গ্রামের মৃত সুনাহর আলীর ছেলে অনু মিয়া ওরফে উটুসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও দুই ব্যক্তি। তারা হাওয়ারুনকে একটি নোহা গাড়িতে নিয়ে দ্রæত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন খোঁজাখুজি করে গত ৮ মে সকাল ৮টায় তারা জকিগঞ্জ থেকে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে ওসিসিতে চিকিৎসা শেষে ডাক্তাররা ছাড়পত্রে তিনি ধর্ষিত বলে উল্লেখ করেছেন।
এ ঘটনায় ১৩ মে গোলাপগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের (নং ০৯/১৩/০৫/২৪) করলেও আজও আসামিদের গ্রেফতার করা হয়নি। তাই তারা বারবার তাদের প্রাণনাশের হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, সিসিক’র ৪০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর লিটন আহমদকে দিয়ে সালিশের নামে অযথা তাদের দোষারূপেরও অভিযোগ করেছেন ফাতিমা। তিনি যখন সালিশের তারিখ নির্ধারণ করেন, তারা অপহৃত বোনের খোঁজে উন্মাদপ্রায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছিলেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন। তিনি অবিলম্বে ধর্ষক অপু লিটন মানিক অনুসহ তাদের দোসরদের গ্রেফতারের জোর দাবি জানান।
পাশাপাশি তাদের নিরপদ জীবন যাপনে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সিলেট-৩ আসনের সাংসদ হাবিবুর রহমান হাবিব এবং সিলেটের পুলিশ প্রশাসনের দ্রæত হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তার ভাবি হাজেরা বেগম। এসময় তার পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও গ্রামের কয়েকজন মুরব্বি উপস্থিত ছিলেন।
Posted ১০:২০ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৯ জুন ২০২৪
ajkersangbad24.com | Fayzul Ahmed