
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি | সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫ | প্রিন্ট | 21 বার পঠিত
রবিবার (১৬ মার্চ) গভীর রাতে আমতলীর বটতলার ইসমাইল শাহ মাজারে ওরশ চলাকালে তোহিদী জনতা হামলা, ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করেছে। এতে মাজারের সামিয়ানা ও আসবাবপত্র পুড়ে গেছে এবং হামলায় ২০ আহত হয়েছে। সোমবার সকালে বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. শফিউল আলম ঘটনা স্থল পরিদর্শন করে সকল পক্ষকে শান্ত থাকার নির্দেশ দেন।
আহতরা হলেন সোলায়মান (৩৮), রেজাউল (১৮), বাদল মৃধা (৪০), দুলাল মৃধা (৪২), আবু বকর (২৯), আবুল হোসেন (২৮), আব্দুল্লাহ আল নোমান (২৮), মোঃ মামুন (৪৩), আবুল কালাম (৪২), জোবায়ের (১৯) ও ফজলুল করিম (২৭)। আহতদের আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অপর আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, রবিবার রাত সোয়া ১২ টার দিকে মাওলানা ওমর ফারুক জেহাদী ও গাজী বায়েজিদের নেতৃত্বে শতাধিক তৌহিদী জনতা মাজারের ওরশ ও গান বাজনা বন্ধ করতে বলেন। এতে উভয়পক্ষের তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে তারা লাঠি শোটা নিয়ে মাজারে হামলা ও ব্যাপক ভাংচুর করে এবং মাজারে অগ্নি সংযোগ করে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে রাত পৌনে তিনটায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
খবর পেয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) তারেক হাসান ও ওসি মোঃ আরিফুল ইসলাম আরিফ ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মাজারের খাদেম অ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল অভিযোগ করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আমতলী উপজেলা শাখার সভাপতি মাওলানা ওমর ফারুক জেহাদী ও সাধারণ সম্পাদক গাজী বায়েজিদের নেতৃত্বে¡ এ হামলা ও অগ্নি সংযোগ হয়েছে। এতে মাজারে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তিনি জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আমতলী উপজেলা শাখার সভাপতি মাওলানা ওমর ফারুক জেহাদী বলেন, এ মাজারটি ভন্ডের আস্থানা। ওরশের নামে এখানে গানবাজনা ও গাজা মাদক সেবন ও নারীর আসর বসে। আমার মাজারের খাদেম অ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান বাবুলকে রমজান মাসে অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেছিলাম কিন্তু তিনি তা না শুনে তার নির্দেশে তার ভক্তবৃন্দেরা আমার লোকজনের ওপর হামলা করেছে। এই ভন্ড মাজারের খাদেম বাবুল উকিল ও তার দোসরদের শাস্তি দাবী করছি।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ রাসেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান বলেন, আহতদের যথাযথ চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আমতলী ফায়ার ষ্টেশনের ওয়ার হাউস ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ হানিফ বলেন, দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে রাত পৌনে তিনটায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। আগুনে মাজারের ভেতরের সামিয়ানা ও দুই ঘর পুড়ে গেছে।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী পৌর শহরের বটতলা এলাকায় ১৯৯৬ সালে ইসমাইল শাহ মাজার স্থাপন করা হয়। তখন থেকে মাজার কর্তৃপক্ষ দুইদিন ব্যাপী ওরশ উৎযাপন করে আসছেন। রবিবার সন্ধ্যায় দুদিন ব্যাপি ২৮তম বার্ষিক ওরশ শুরু হয়। হামলা ও অগ্নিকান্তের ঘটনায় আমতলীতে মাজার পন্থি মানুষের মধ্যে চরম আতংক বিরাজ করছে।
Posted ১১:১৪ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫
ajkersangbad24.com | Fayzul Ahmed